সিলেটে একদিকে বেড়ে চলছে করোনা সংক্রমণ, অন্যদিকে বাড়ছে মৃত্যু। শনিবার (১০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩৯৪ জন। এসময়ে সিলেট বিভাগ মিলে গড় শনাক্তের হার ছিল ৫৫.৪১ শতাংশ। আর সিলেট জেলায় সনাক্তের হার ছিল ৬০.৩৩ শতাংশ।
তবে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় ছিল গত ২৪ ঘণ্টায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় করোনায় আক্রান্ত শনাক্তের হার ছিল প্রায় ৮৭ শতাংশ। চলতি জুলাই মাসে এ বিভাগে সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে মৃত্যুও। গত ১০ দিনে করোনা আক্রান্ত হয়ে সিলেট বিভাগে মারা গেছেন ৩৯ জন।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে গতকাল শুক্রবার (৯ জুলাই) ২৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে পজেটিভ শনাক্ত হন ২৪০ জন। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল প্রায় ৮৭ শতাংশ। এর আগে, সিলেটের চারটি ল্যাবের কোনওটিতে এতো বেশি সনাক্ত হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, শনিবার (১০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় সিলেট বিভাগে যে ৩৯৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে ২৬২ জনই সিলেট জেলার বাসিন্দা। বাকিদের মধ্যে মৌলভীবাজারের ৫৪ জন, হবিগঞ্জের ৩৫ জন, সুনামগঞ্জের ১৩ জন ও ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩০ জন রয়েছেন। আর সবমিলিয়ে বিভাগে আক্রান্ত সনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৪১ জনে। যার দুই তৃতীয়াংশই সিলেট জেলার।
গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে করোনায় মারা গেছেন আরও ৬ জন। এ নিয়ে বিভাগে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫১৭ জনে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪১৯ জন মারা গেছেন সিলেটে। বাকিদের মধ্যে মৌলভীবাজারে ৪০ জন, সুনামগঞ্জে ৩৬ জন ও হবিগঞ্জের ২২ জন রয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন গত ১০ দিনে। এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ৩৯ জন। যার মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু হয় গত ৭ জুলাই।
গত ২৪ ঘন্টায় সিলেট বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১১৮ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলার ১০৪ জন। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হওয়া ২৪ হাজার ৭৩২ জনের মধ্যে সিলেট জেলার ১৬ হাজার ৯৫২ জন রয়েছেন। শনিবার সকাল ৮টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ২৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর সবমিলিয়ে বিভাগের চার জেলায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৩৩ জন।
এদিকে, সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা মানুষের বেপরোয়া মনোভাবকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, লকডাউনের মধ্যেও অযথা বাইরে ঘোরাফেরা করছেন অনেকেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতাও রয়েছে মানুষের। ফলে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম বলেন, সরকার নির্দেশিত কঠোর লকডাউন অবশ্যই কঠোরভাবে মানতে হবে। একেবারে জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বেরোলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না।