এবার করোনায় ব্যতিক্রমধর্মী সময় কাটাচ্ছে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মনপাড়ার কামার সম্প্রদায়ের লোকজন। প্রতি বছর আসন্ন কোরবানির দিনগুলোতে দা, ছুরি, বটিসহ বিভিন্ন লৌহা জাতীয় জিনিস তৈরিতে দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাতো কামাররা। অনেক ব্যস্ততার মধ্যে কাটালেও এবারের কোরবানিটা অনেক ব্যতিক্রম। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস এর প্রভাব পড়েছে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলাতেও। কঠিন অবস্থা বিরাজ করছে এই কোরবানিতে। গত দুই বছরের মতো হচ্ছে না তেমন বেচা-বিক্রি আর্থিক সংকটে আছে অনেক পরিবার । তাই মন্দা বেচা-বিক্রির মধ্যে ব্যতিক্রম এক সময় কাটাচ্ছে ব্রাহ্মনপাড়ার কামার সম্প্রদায় ।
প্রতিবছর ব্রাহ্মনপাড়ার বিভিন্ন জায়গাতে বসতো বিশাল গরু ছাগলের হাট। ক্রেতা বিক্রেতাদের সরগমে মুখরিত হতো বিভিন্ন গরুর হাট গুলো। এর প্রভাব পড়তো কামারের দোকানেও। এবছর বেচাবিক্রি কম থাকায় কাজ কমেছে কামারের দোকানে। ফলে ব্রাহ্মনপাড়ার কামাররা বর্তমানে কর্মহীন অলস সময় কাটাচ্ছে।
শনিবার সকালে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে কামাররা অলস বসে সময় পার করছে। সাহেবাবাদ বাজারের বাবু কর্মকার জানান,আগের বছরে কোরবানি ঈদের ১৫ দিন আগে থেকে দিন-রাত নতুন দা, ছুরি, বটি তৈরি এবং শান দিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হতো। দিনে আয় হতো ৫-৬ হাজার টাকা। আর এখন করোনা ভাইরাসের কারণে কোন কাজ নেই। দিনে ৩-৪শ’ টাকা আয় করতে পারিনা। তাই হাজার বছরের এই কর্মকার সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। আমরা সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি করোনা ভাইরাসের এই করুন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে যদি আমাদের কোনো আর্থিক সহযোগিতা অথবা প্রণোদনা প্রদান করতো তাহলে আমরা আমাদের এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারতাম । তা না হলে হলে আমাদের এই ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। কারণ আমরা সকল কর্মকার সম্প্রদায় এই বছর প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি করোনা ভাইরাসের কারণে। বর্তমান কর্মকাণ্ডের অবস্থা জানতে চাইলে কামার সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন আগের মত আর দা, ছুরি, বটি নিয়ে আসেনা ক্রেতা এবং দা, বটি,কুড়াল এর জন্য কেউ অর্ডারও দেয়না। তাই কাজ নেই, ব্যস্ততাও নেই। এ অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে। এই শিল্পের সাথে জড়িত কর্মকাররা সরকারের নিকট আবেদন করে এ প্রতিনিধিকে জানান, অন্তত এবছর তাদেরকে আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে হলেও এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা হউক।