Published : Friday, 13 August, 2021 at 12:00 AM, Update: 13.08.2021 2:06:04 AM
করোনা
মহামারি সারা দেশে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে দুই
শতাধিক মানুষের। মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এই
অবস্থায় সারা দেশের টিকাকেন্দ্রগুলোতে মানুষ রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।
অনেক কেন্দ্রেই আগের রাত থেকে মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তার পরও
পাচ্ছে না প্রত্যাশিত টিকা। ৮-১০ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও বহু মানুষকে
টিকা না নিয়ে ফিরতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আবারও দেখা দিয়েছে টিকার সংকট।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া আরো আগেই
বন্ধ করা হয়েছে। গতকাল থেকে বন্ধ হয়েছে মডার্নার টিকার প্রথম ডোজ প্রদান।
আশঙ্কা করা হচ্ছে শনিবার থেকে বন্ধ হয়ে যেতে পারে সিনোফার্মের টিকার প্রথম
ডোজ দেওয়া। এই অবস্থায় টিকাপ্রত্যাশী মানুষের হতাশা চরমে উঠতে পারে।
দ্বিতীয়
ডোজের টিকা হাতে না রেখে প্রথম ডোজ হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার
টিকা বেশি দেওয়ায় এর আগে দ্বিতীয় ডোজের সংকট তৈরি হয়। এর পর থেকে দ্বিতীয়
ডোজের টিকা হাতে রেখেই টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেই হিসাবে সিনোফার্মের টিকারও
প্রথম ডোজ অতিরিক্ত দেওয়া হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ টিকার ঘাটতি
তৈরি হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ। কিন্তু সিনোফার্মের টিকা আসার এক ধরনের নিশ্চয়তা
থাকায় কর্তৃপ হয়তো ঘাটতি নিয়ে খুব একটা ভাবছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তার
পরও দ্বিতীয় ডোজের মজুদ নিশ্চিত রাখার ব্যাপারে আরো সতর্ক হতে হবে।
মঙ্গলবার রাতে চীন থেকে সিনোফার্মের আরো ১৭ লাখ টিকা এসেছে। এ নিয়ে এই
পর্যন্ত চারটি ব্র্যান্ডের টিকা দেশে এসেছে দুই কোটি ৭২ লাখ ৪৭ হাজার ৯২০
ডোজ। মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট টিকা দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৯৬ লাখ ৭১ হাজার ৬২০
ডোজ। অন্যদিকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নিবন্ধন করেছে প্রায় তিন কোটি মানুষ।
অভিযোগ রয়েছে, নিবন্ধনের পর এক মাস পার হয়ে গেলেও অনেকে টিকা পাচ্ছেন না।
আগে
মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার আগ্রহ অনেক কম ছিল, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের
মানুষ টিকা নিতেই চাইত না। কিন্তু গ্রামেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত
ছড়িয়ে পড়ায় টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে। মানুষের এই আগ্রহকে কাজে
লাগিয়ে টিকাদান কার্যক্রমে আমাদের দ্রুত এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এটা ঠিক,
সারা বিশ্বেই টিকার ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। এ অবস্থায়ও টিকা সংগ্রহের জন্য
সরকার নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে। টিকা
পাওয়ার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে অনেক। আশা করা যায়, শিগগিরই টিকার এই সংকট কেটে
যাবে। তার পরও টিকা সংগ্রহে সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। যৌথ আয়োজনে
দেশে টিকা তৈরির যে প্রক্রিয়া চলছে, তাকে আরো দ্রুততর করতে হবে। সে েেত্র
নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে টিকা রপ্তানিরও যথেষ্ট সুযোগ থাকবে।