নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস
Published : Thursday, 2 September, 2021 at 12:00 AM
অস্ট্রেলিয়ার
পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও প্রথম জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মত
ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র ফরম্যাটে কিউইবধ করলো লাল-সবুজের দল। সফরকারী
নিউজিল্যান্ডকে ৬০ রানে আটকে দিয়ে ৩০ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয়
সাকিব-মুশফিকরা। এর আগে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম এই সংস্করণে শেষ দশবারের
দেখায় প্রত্যেকবারই হেরেছে বাংলাদেশ। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে
থাকলো টাইগাররা।
বাংলাদেশে খেলতে এসে শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতো হলো
নিউজিল্যান্ডের। সফরকারীদের ৬০ রানে অলআউট করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে
কিউইদের সর্বনি¤œ রানে অলআউটের লজ্জা দেয় বাংলাদেশ। এর আগেও তাদের সর্বনি¤œ
রান ছিল ৬০, সেটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে কোন প্রতিপক্ষের সর্বনি¤œ রানের রেকর্ডও এটা। মিরপুরের
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেও এটা কোন দলের সর্বনি¤œ স্কোর।
৬১ রানের
মামুলি টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে সাবধানী খেলেন টাইগার দুই
ওপেনার লিটন-নাঈম। কিন্তু পরের ওভারেই আতœাহুতি দেন নাঈম শেখ। ১ রান করেই
ম্যাকনকির শিকার হন তিনি। নাঈমের বিদায়ের পর স্কোরকার্ডে ৬ রান যোগ হতেই
সাজঘরে ফিরেন লিটন। প্যাটেলের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্ট্যাম্পড হন তিনি।
বিদায়ের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১ রান।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর
সাকিব আর মুশফিক মিলে সাবধানী খেলে স্কোর বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন। কিন্তু
মুশফিকের সঙ্গে ৩০ রানের জুটি গড়েই রবীন্দ্রর প্রথম শিকার হন সাকিব। ৩৩ বলে
২৫ রান করেন তিনি। পরে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ৩০ বল হাতে
রেখে জেতে বাংলাদেশ। ১৬ রানে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে
বোলিংয়ের আমন্ত্রণ জানান কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম। ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম
ওভারেই মেহেদী হাসানের হাতে বল তুলে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অধিনায়কের
আস্থার প্রতিদান দেন প্রথম ওভারেই। ম্যাচের তৃতীয় বলেই কিউই ওপেনার রাচিন
রবীন্দ্রকে ফেরান তিনি। অভিষেকেই ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে আউট হন তিনি।
ইনিংসের
তৃতীয় ওভারে বল করতে আসেন সাকিব। এসেই উইকেটের দেখা পান বিশ্বসেরা
অলরাউন্ডার। বোল্ড করে ফেরান উইল ইয়াংকে। ১১ বলে ৫ রান করে ফিরেন তিনি।
পরের ওভারে নাসুম ফেরান অভিজ্ঞ কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে। মাত্র ১ রান করেন
গ্র্যান্ডহোম। এর দুই বল পর আবারও উইকেটের দেখা পান নাসুম। ৬ বলে ২ রান করা
ব্লান্ডেল তার আর্ম বলে বোল্ড আউট হন।
টম ল্যাথাম ও হেনরি নিকোলসের
জুটিতে কিউইরা যখন প্রতিরোধ গড়ছে তখনই আবার ছন্দপতন হল নিউজিল্যান্ডের।
সাইফউদ্দিনের বোলিংয়ে লেগসাইডের বলে তুলে মারতে গিয়ে ফিরেন নিউজিল্যান্ড
অধিনায়ক টম ল্যাথাম। ২৫ বলে ১৮ রান করেন তিনি। এরপরের ওভারে সাকিব এসে
সাজঘরে ফেরান কোল ম্যাকননচিকে। ৩ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি ম্যাকননচি।
এটি সাকিবের দ্বিতীয় উইকেট।
হেনরি নিকোলসের কাঁধেই ছিল
নিউজিল্যান্ডকে টেনে তোলার দায়িত্ব। কিন্তু তিনিও ফিরেন দ্রুত।
সাইফউদ্দিনের স্লো বলে উড়িয়ে মেরে ধরা পড়েন মুশফিকের হাতে। ১টি চারের মারে
২৪ বলে ১৭ রান আসে নিকোলসের ব্যাট থেকে।
সাইফউদ্দিনের ২ উইকেটের পর
প্রথম উইকেটের দেখা পান মোস্তাফিজ। এজাজ প্যাটেলকে ইনিংসের ১৫তম ওভারের
প্রথম বলে বোল্ড করেন। ৬ বলে মাত্র ৩ রান করেন এজাজ। একই ওভারের পঞ্চম বলে
ফেরান ডগ ব্রেসওয়েলকে। তার ব্যাট থেকে ৭ বলে ৫ রান আসে। এরপর ডাফিকে ফিরিয়ে
মাত্র ৬০ রানে কিউইদের ইনিংসের সমাপ্ত করেন মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন নাসুম-সাকিব-সাইফ উদ্দিন। তিনটি উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান।
এই
ম্যাচে জিতে বাংলাদেশের সফলতম টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হলেন মাহমুদউল্লাহ। ১১
টি-টোয়েন্টি জিতে মাশরাফিকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। ১০টি জয় নিয়ে মাহমুদউল্লাহর
পরেই আছেন মাশরাফি। মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১০ জয় এসেছে ২৮ ম্যাচে।
মাহমুদউল্লাহর ১০ জয় এসেছে ২২ ম্যাচে।