বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া জাপানের এক নাগরিক মারা গেছেন। ৯৬ বছর বয়সী সুনাও সুবোই পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী প্রচার চালিয়ে গেছেন। গত শনিবার রক্ত স্বল্পতায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট হিরোশিমা শহরে যখন পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরিত হয় তখন কলেজের পথে ছিলেন সুনাও সুবোই। হামলায় তার পুরো শরীর পুড়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো ওই হামলায় এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন সুনাও সুবোই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামা যখন হিরোশিমায় ঐতিহাসিক সফরে যান তখন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সুবোই। ২০১৬ সালে ওই সফরের সময় তারা হাত মেলান আর বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেন।
পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের দিনে ২০ বছরের প্রকৌশল শিক্ষার্থী ছিলেন সুনাও সুবোই। সেদিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে পরে তিনি বলেছেন, ‘উলঙ্গ অবস্থায় আমি ৬ আগস্ট তিন ঘণ্টা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারিনি।’ পরে জ্ঞান হারানোর আগে একটি পাথর নিয়ে তিনি মাটিতে লেখেন, ‘এখানে সুবোইয়ের মৃত্যু হয়েছে’। কয়েক সপ্তাহ পর তার জ্ঞান ফেরে।
পরে জাপানের স্কুলে গণিত পড়াতেন সুনাও সুবোই। তরুণদের যুদ্ধের সময় নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতেন তিনি। পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধীদের তার পরামর্শ ছিলো, ‘হাল ছাড়বেন না’।
হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া প্রায় এক লাখ ২৭ হাজার মানুষ এখনও জীবিত আছেন। সুনাও সুবোই দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রেখে গেছেন।