ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বাসভাড়ায় শৃঙ্খলা ফেরান গণপরিবহনে নৈরাজ্য
Published : Friday, 19 November, 2021 at 12:00 AM
বাসভাড়ায় শৃঙ্খলা ফেরান গণপরিবহনে নৈরাজ্যঢাকা মহানগরীতে বাসভাড়া নিয়ে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পর বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সরকার ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া ২৬.৫ শতাংশ বাড়িয়ে ভাড়ার নতুন হার নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু সিএনজিচালিত বাসের ভাড়া আগের মতোই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। বাস্তবে দেখা যায়, অনেক বাসেই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কিছু বাস গেটলক, সিটিং ইত্যাদি নাম দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। বাসে ভাড়ার তালিকা টাঙিয়ে রাখার কথা থাকলেও অনেক বাসে তা করা হয় না। এরাও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। আবার সিএনজিচালিত বাসগুলো নানা কৌশলে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া আদায় করছে। সরকার এ বাসগুলোতে ‘সিএনজিচালিত’ স্টিকার লাগানোর কথা বলেছে। কিন্তু সিএনজিচালিত অনেক বাসেই দেখা যায়, ‘ডিজেলচালিত’ স্টিকার লাগিয়ে রাখা হয়েছে। অনেক বাসে সিএনজি নেওয়ার নজলের ওপর ডিজেলের নজল লাগিয়ে রাখা হয়েছে। রাতে সিএনজি নেওয়ার সময় এটি খুলে ফেলা হয়। অন্যদিকে মিরপুর এলাকায় দুই দিন ধরে এক প্রকার ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন বাস শ্রমিকরা। শত শত বাস রাস্তার দুপাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। কিছুসংখ্যক বাস চালানো হলেও শ্রমিকরা সেগুলোর চলাচলে বাধা দিচ্ছেন এবং বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিতেও দেখা গেছে। ফলে মিরপুর এলাকার মানুষকে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বাসভাড়া নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই যাত্রী ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা, এমনকি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। এমন ঘটনার জের ধরেই গত মঙ্গলবার মিরপুর থেকে এয়ারপোর্ট-আব্দুল্লাপুর ও নতুনবাজার পথে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মিরপুর এলাকায় গতকালও প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে। নিয়মিত বাসযাত্রীরা দ্রুত এই সমস্যা সমাধান এবং বাসগুলোতে ভাড়ার নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বাস শ্রমিকরাও এর সমাধান দাবি করছেন। কারণ প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সঙ্গে ঝগড়া করতে করতে তাঁরাও ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। কোনো কোনো বাস শ্রমিক জানিয়েছেন, অনেক মালিকই এখনো তাঁদের কাছ থেকে ‘সিটিং’ গাড়ি হিসেবে জমা নিচ্ছেন। তাঁরা সিটিং ভাড়া নিতে না পারলে বাড়তি জমা দেবেন কিভাবে? এদিকে বাসভাড়ার নৈরাজ্য দূর করতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অভিযান পরিচালনা করছে। বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারাও অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি ফাঁকফোকর বন্ধের উদ্যোগও নিতে হবে। এর পরও যারা অনিয়ম করবে তাদের বিরুদ্ধে বাসের রুট পারমিট বাতিলসহ কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
গণপরিবহন যাঁরা চালাবেন, তাঁদের অবশ্যই সরকার নির্ধারিত নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে। নানা রকম ছলছুতায় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা অবশ্যই অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। অন্যদিকে যাত্রীদের স্বার্থ দেখা রাষ্ট্রের কর্তব্য। তাই ভাড়াসহ গণপরিবহনে নৈরাজ্য দূর করতে বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আরো তৎপর হতে হবে। আমরা চাই না পথে পথে বাগবিতণ্ডা বা কোনো ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হোক।