ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
পুলিশ লাইন প্রতিরোধ যুদ্ধ ও গণহত্যার ইতিহাস জাগ্রত করল নাটক ‘অমানিশা’
Published : Tuesday, 14 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 14.12.2021 12:13:38 AM
পুলিশ লাইন প্রতিরোধ যুদ্ধ ও গণহত্যার ইতিহাস জাগ্রত করল নাটক ‘অমানিশা’তানভীর দিপু:
মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লা পুলিশ লাইন প্রতিরোধ যুদ্ধ ও গণহত্যা নিয়ে নাটক অমানিশা মঞ্চায়িত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ২৫ মার্চ কুমিল্লা পুলিশ লাইনে যে প্রতিরোধ যুদ্ধ ও গণহত্যা, তৎকালীন জেলা প্রশাসক এ কে এম শামসুল হক খান ও পুলিশ সুপার মুন্সী কবির উদ্দিনসহ পুলিশ সদস্যদের দুঃসাহসিক বীরত্বগাঁথা ও আত্মদান নিয়ে এই নাটকের নির্মান।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা পুলিশ লাইনের পুরানো ব্যারাকে উন্মুক্ত মঞ্চে  নাটকের মঞ্চায়ন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব  আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। উদ্ধোধক হিসেবে অনলাইনে ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।
নাটক অমানিশার ভাবনা ও পরিকল্পনায় ছিলেন লিয়াকত আলী লাকী, রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মামুনুল হক। প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন জেলা কালচারাল কর্মকর্তা  সৈয়দ মুহম্মদ আয়াজ মাবুদ। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর এ আয়োজন করে।
নাটক শেষে উপস্থিত নাট্যশিল্পী, অতিথি এবং সুধীজনদের নিয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দিয়ে সবাইকে আবারো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করে তোলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহা উদ্দিন বাহার এমপি। নাটক পরিবেশন শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা এমপি বাহার বলেন, একটি জয় বাংলা শ্লোগান বলার জন্য আমাদের অনেক লোককে হত্যা করা হয়েছে। শুধু ডিসি নয়, এসপি নয়- মুক্তিযুদ্ধের সময় গ্রামের মানুষরাও জয় বাংলা বললেই পাক হানাদাররা তাদের নিয়ে গিয়ে হত্যা করতো। তাদেরকে বলতে বাধ্য করা হতো- পাকিস্তান জিন্দাবাদ। তারপরও বাঙালিরা বলতো জয় বাংলা- সাথে সাথেই তাদের গুলি করা হত। ওই জয় বাংলার যে শক্তি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শক্তি ছিলো।
নাটকের প্রধান সমন্বয়ক ও জেলা কালচারাল কর্মকর্তা সৈয়দ আয়াজ মাবুদ বলেন,  প্রায় শত অভিনেতা,কলাকুশলীর প্রাণ জাগানো আবেগ ও শ্রম দিয়ে এ নাটকটি পূর্ণতা পেয়েছে। শত প্রতিরোধ-গণহত্যার মধ্যে কুমিল্লা পুলিশ লাইন প্রতিরোধ যুদ্ধ ও গণহত্যা একটি বিশেষ সাড়া জাগানো ইতিহাস। সেই ইতিহাস পুনর্বার জাগ্রত করার প্রয়াস গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটার 'অমানিশা'। ২৫ মার্চ ১৯৭১ এ যে 'অমানিশা'-এর সূচনা হয়েছিলো, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মাধ্যমে তার ঘোর কেটে নবচন্দ্রের আবির্ভাব। সেই বিজয়ের সূবর্ণজয়ন্তীতে দাঁড়িয়ে দেশপ্রেমের গৌরবের গাঁথাই 'অমানিশা'। সেই জাগরুক ইতিহাসকে নতুন প্রজন্ম প্রত্যক্ষ করেছে।
নাটক অমানিশা এর প্রযোজনা করে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও কুমিল্লা রেপার্টরি নাট্য দল। প্রযোজনা উপদেষ্টা ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন এবং কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির এডহক কমিটির সদস্য হাসান ইমাম মজুমদার ফটিক। গবেষণায় ছিলেন মামুন সিদ্দিকী। নাটক শেষে সকল শিল্পী ও কলাকুশলীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন অতিথিরা।