Published : Sunday, 6 March, 2022 at 12:00 AM, Update: 06.03.2022 12:45:49 AM
তানভীর দিপু:
ষষ্ঠ
থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের রোবটিক্স এবং প্রোগ্রামিংয়ের হাতেখড়ি দিয়ে
গেলেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা- নাসায় কাজ করা বাংলাদেশী প্রকৌশলী এবং
বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রকল্পের অভিজ্ঞ প্রযুক্তিবিদরা। গতকাল কুমিল্লা
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে রোবটিক্স ও প্রোগ্রামিং বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সেমিনার ও
কর্মশালায় অংশ গ্রহন করে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্য থেকে ১০
টি গ্রুপে মোট ৬০ জন শিক্ষার্থীকে হাতে কলমে শেখানো হয় রোবট জাতীয় যন্ত্র
বানানোর কৌশল এবং পদ্ধতি। দিন শেষে তারা সবাই সফলভাবে অকবস্টেকল এভয়েডিং
মেশিন, যে যন্ত্রটি গাড়ির আকৃতির করে তৈরী করা হয়। শিক্ষার্থীরা এতে এমন
একটি সেন্সর লাগিয়ে প্রোগ্রামিং করে দেন যেন- মেশিনটি কোথাও গিয়ে তার সামনে
বাঁধা পরলে সেখান থেকে আবার ফিরে আসতে পারে। প্রযুক্তিবিদদের মতে, এটি
একটি বেসিক রোবট। কর্মশালায় অংশ নেয়া স্কুল শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় সনদ।
সেমিনার ও কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের
আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম পরিচালক ও যুগ্ম সচিব নাহিদ সুলতানা
মল্লিক। কর্মশালা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ ইনোভেশন
ফোরাম এর প্রকৌশলীদের অংশগ্রহনে এটুআই প্রকল্পের মাধ্যমে স্কুল
শিক্ষার্থীদের এই দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন। কুমিল্লায় এই ওয়ার্কশপে এসে
খুবই ভালো লাগছে। শিশু বয়সী শিক্ষার্থীরা রোবটিক্স এবং প্রোগ্রামিং শিখতে
আনন্দ পাচ্ছে। তারা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। বাংলাদেশ চতুর্থ
শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় তারাই শক্তি। তাই প্রযুক্তিগত বিভিন্ন দিক নিয়ে
আমাদের গবেষণা যেমন এগিয়ে নিতে হবে তেমনি শিল্পবিপ্লবে উপযোগি প্রজন্ম গড়ে
তুলতে হবে। শিশুরা যদি এখন থেকেই এসব শিখে বড় হয় তারাই বাংলাদেশের শক্তি
হবে।
তিনি আরো বলেন, স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের রোবটিক্স এবং
প্রোগ্রামিং এর কর্মশালা কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রকল্প থেকে কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবার চিন্তা
ভাবনা রয়েছে।
প্রশিক্ষ হিসেবে ঢাকা থেকে আসা ইন্টারনেট অব থিংস-এ
বিশেষজ্ঞ আন্তর্জাতিক ও জাতীয়ভাবে কাজ করা প্রযুক্তিবিদ জুবায়ের আল ইমরান
খান জানান, আমরা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিং এবং
রোবটিক্স শিখাই। কিন্তু কুমিল্লায় এই কর্মশালায় শিশুদের বেসিক রোবটিং এবং
প্রোগ্রামিং এর প্রাথমিক জ্ঞান দিতে পেরে আমরা খুবই খুশি। শিশুরা যদি তাদের
এই বয়স থেকে প্রযুক্তি চর্চা করে তাহলে তারা খুব সহজেই অভিজ্ঞ হয়ে উঠবে।
শিশুদের এভাবে প্রোগ্রামিং এবং রোবটিক্স চর্চা যদি নিয়মিত করা যায় তাহলে
আমরা আশা করি বাংলাদেশেই বিশ্বমানের রোবট বিশেষজ্ঞ তৈরী হবে।
কুমিল্লা
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারেও প্রধান অতিথি
হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম
পরিচালক ও যুগ্ম সচিব নাহিদ সুলতানা মল্লিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন অর্থ বিভাগের উপ সচিব রশনারা লাবনী, আইসিটি বিভাগের উপসচিব জাকির
হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও
আইসিটি) নাজমা আশরাফী।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান
জানান, মার্চ-এপ্রিল-মে এই সময়ের মধ্যে কুমিল্লার সব উপজেলায় এই সেমিনার ও
কর্মশালা আয়োজন করা হবে। এছাড়া জেলা পর্যায়েও মাসে অন্তত একটি কর্মশালা
আয়োজনের প্রত্যাশা রয়েছে।