ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কৃষক 'নিষিদ্ধ' নয়, তবু নিষেধ থাকে
Published : Monday, 14 March, 2022 at 12:00 AM
কৃষক 'নিষিদ্ধ' নয়, তবু নিষেধ থাকেসিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ||
সাহিত্যে কথা বলি, কী বলি রাজনীতির কথা, কৃষকের উপস্থিতি কোথাও নিষিদ্ধ নয়, তবু একটা নিষেধ থাকে। অলিখিত। নিষেধটা শ্রেণির। কৃষক সাহিত্য সৃষ্টি করে না, রাজনীতিও তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না; সাহিত্যে যেমন, রাজনীতিতেও তেমনি, কর্তৃত্ব অকৃষকদের। এরা কৃষকদের জানে, তার দুঃখে সহানুভূতি জানায়, আর পক্ষে কথাও বলে। কিন্তু কৃষকের জন্য যে জায়গা করে দেবে, তা পারে না। নিষেধ আসে বিচ্ছিন্নতা ও দূরবর্তিতা থেকে; দুর্লঙ্ঘ্য হয়ে দাঁড়ায় স্বার্থের পাহারাদারি। কৃষক ও অকৃষকদের স্বার্থ দেখা যায় পরস্পরবিরোধী।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যে কৃষকের দুঃখের সংক্ষিপ্ত কিন্তু মর্মস্পর্শী বিবরণ আছে বঙ্কিমচন্দ্রের লেখাতে। কৃষক তার উপন্যাসে নায়ক হবে- এটা সম্ভব ছিল না। নায়ক জমিদাররাই এবং জমিদারদের জীবনযাপনে কৃষক প্রান্তবর্তী বটে; বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসেও সেট সত্য। কিন্তু প্রবন্ধে বঙ্কিমচন্দ্র বঙ্গদেশের কৃষকদের দুর্দশায় অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত। সেই দুর্দশার খরালোকে তার প্রবন্ধে জমিদারদের বিলাসবাহুল্য নিতান্ত কুৎসিত ঠেকে। শ্রেণিবিভাজনের বিষয়টা বঙ্কিমচন্দ্র অত্যন্ত পরিস্কারভাবে জানতেন। জমিদার যে কৃষকের শত্রু প্রবন্ধে তা অত্যন্ত পরিস্কার করে বলেছেন। জমিদারি ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করেছে ১৭৯৩ সালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এবং সে-ব্যবস্থাই বঙ্গদেশের কৃষকের সর্বনাশের জন্য দায়ী। এ সত্য অত্যন্ত পরিচ্ছন্নরূপে তার লেখাতে উপস্থিত। এই সূর্যের চারপাশেই অন্যসব গ্রহ-উপগ্রহের ঘূর্ণিবাজি, জানিয়েছেন তিনি। তবু 'বঙ্গদেশের কৃষক' প্রবন্ধের উপসংহারে এসে তিনি লিখেছেন, '১১৯৩ সালে যে ভ্রম ঘটিয়াছিল এক্ষণে তাহার সংশোধন সম্ভব না। সেই ভ্রান্তির উপর আধুনিক বঙ্গসমাজ নির্মিত হইয়াছে। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ধ্বংসে বঙ্গসমাজে ঘোরতর বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হইবার সম্ভাবনা। আমরা সামাজিক বিপ্লবের অনুমোদক নহি।'
প্রথমে ঘটবে বিশৃঙ্খলা, পরে দেখা দেবে বিপ্লব- এই রকমের আশঙ্কা। অসামান্য বঙ্কিমচন্দ্রও তার শ্রেণির মানুষই রয়ে গেছেন, শেষ পর্যন্ত; সীমান্ত লঙ্ঘনের বৈপ্লবিক ঘটনাটি ঘটেনি। বরং তিনি সংকুচিত হয়ে গেছেন। বিপ্লবকে পাছে সহায়তা করা হয় তাই 'সাম্য' নামে জনপ্রিয় বইটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, মীর মশাররফ হোসেনের নাটক 'জমিদার দর্পণ'-এর প্রশংসা করে বইটিকে প্রচার না করতে লেখককে সৎপরামর্শ দিয়েছেন। শঙ্কা ওই একই, পাছে অশান্ত কৃষক উস্কানি পেয়ে যায়। জমিদারি ব্যবস্থা অপসারণের 'কুপরামর্শ' তিনি ইংরেজদের দিতে পারেননি। কারণ, তার মতে, ওই কাজ করলে ইংরেজরা 'মিথ্যাবাদী' প্রমাণিত হবে এবং 'প্রজাবর্গের অবিশ্বাসভাজন' হয়ে পড়বে। বলেছেন, 'যেদিন ইংরেজের অমঙ্গলাকাঙ্ক্ষী হইব, সমাজের অমঙ্গলাকাঙ্ক্ষী হইব, সেদিন সে পরামর্শ দিব।' ইংরেজের মঙ্গল ও উঠতি মধ্যবিত্ত বাঙালির উন্নতি যে একসূত্রে গাঁথা- এমন স্পষ্ট সত্য বঙ্কিমচন্দ্রের মতো সত্য-উন্মোচনকারী লেখকের পক্ষে চেপে রাখা অসম্ভব ছিল বৈকি।
বঙ্কিমচন্দ্রের অল্প কিছু আগের মানুষ মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। মধুসূদনের 'বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ'তে জমিদার ভক্তপ্রসাদ বাবুর অত্যাচারের বিরুদ্ধে দরিদ্র প্রজা হানিফ গাজি ও পঞ্চানন বাহস্পতি ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়েছে। জমিদার তাতে জব্দ হয়। কিন্তু সত্য তো এটাও যে তার নিজের রচিত এই প্রহসনটি সম্পর্কে মধুসূদন উচ্চ ধারণা পোষণ করতেন না। তার সময়ে এটির যে মঞ্চায়ন হয়েছে, এমনও নয়। সর্বোপরি এর স্বাভাবিক গ্রাম্য ভাষাকে তিনি যথার্থ সাহিত্যের জন্য উপযুক্ত বলে যে মনে করতেন, তাও নয়। মধুসূদন তার অপর প্রহসন 'একেই কি বলে সভ্যতা'য় তার সমসাময়িক অত্যন্ত আধুনিক বলে পরিচিত ইয়ং বেঙ্গলদের বিদ্রোহের সামান্যতাকে বিদ্রুপ করেছেন। ইয়ং বেঙ্গলরা নিজেদের জন্য স্বাধীনতা চাইত, কিন্তু তারা বঙ্গদেশের কৃষকদের নিয়ে ভাবত বলে জানা যায় না। অপরদিকে মানুষ হিসেবে সবাইকে ছাপিয়ে উঠেছিলেন যে অসামান্য বিদ্যাসাগর; তার জগতে কৃষকের ঠাঁই হয়নি। তারা যে সাঁতরে উঠবে, এমনটা পারেনি। না- তার বিদ্যার জগতে, না- তার করুণায়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসে কৃষক আছে, কৃষকের জীবনও আছে। কিন্তু তুলনায় জমিদারের সংখ্যা অনেক বেশি এবং চূড়ান্ত বিচারে তার নিজের টানটা জমিদারদের দিকেই। স্মরণীয়, তিনি যতই সংবেদনশীল হোন; ছিলেন সামাজিক বিপ্লবের বিরোধী। কথাসাহিত্যকে তিনি বঙ্কিমচন্দ্রের প্রবল প্রতাপান্বিত জমিদারবাড়ি থেকে বের করে মধ্যবিত্তের ও নিম্ন মধ্যবিত্তের জীবনে নিয়ে এসেছিলেন এবং তার লেখায় রাজনৈতিক স্বাধীনতার স্পৃহা অত্যন্ত প্রবলভাবে উপস্থিত; তাই বলে দেশে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে এত দূর পর্যন্ত এগোতে প্রস্তুত ছিলেন না। তার ভেতরে রক্ষণশীলতা ছিল।
বাংলার গ্রামের ছবি জীবন্ত হয়ে আছে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাসাহিত্যে। স্বভাবতই সেখানে কৃষক আছে। তাদের সংকট, শ্রম, সংগ্রাম সবই পাওয়া যাবে। কিন্তু অভাব বিপ্লবী চেতনার। তারাশঙ্কর রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হয়েছিলেন; সে-রাজনীতি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের, যার কাজ বিপ্লবের সম্ভাবনাকে উৎসাহ দান করা নয়; বিপ্লবের বিরোধিতা করা। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনায় এক ধরনের বিষণ্ণতা পাওয়া যায়। ওই বিষণ্ণতা গ্রামবাংলার বৈশিষ্ট্য বৈকি। বাংলার গ্রামে প্রাণ যেমন পাওয়া যায়; বর্ষা ও গ্রীষ্ফ্মের এবং বসন্তেরও। তেমনি বিষণ্ণতা থাকে শরতে, হেমন্তে ও শীতে। বিভূতিভূষণের গ্রাম আসলে নিম্ন-মধ্যবিত্তেরই। সে-গ্রামে দারিদ্র্য বড় হয়ে ওঠে, কৃষকের সংগ্রামকে ছাপিয়ে। বলা যায়, তার গ্রাম কৃষকশূন্যই বটে।
রূপসী বাংলার গ্রামীণ জীবনের যে প্রাণস্পর্শী ছবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় পাওয়া যাবে, তেমনটা বাংলা সাহিত্যে দুর্লভ। এ গ্রামও বিষণ্ণ। এখানে ফসলের ক্ষেত, প্রবহমান নদী, পাখি, আকাশ, ঋতুর যাওয়া-আসা, গাছপালা সবকিছু প্রাণের সম্পদে সমৃদ্ধ; মানুষের আবেগ আছে। সেখানে দেখা ও অনুভব করার মানুষ আছে বলেই এই বাংলা এত মধুর। সবকিছুই মানুষের জন্য। তবে এই মানুষ শিক্ষিত, রুচিবান, ইতিহাসে প্রোথিত আন্তর্জাতিকতার বোধে ঋদ্ধ বাঙালি মধ্যবিত্ত। এই মানুষটি মানুষের ভিড় পছন্দ করে না। সে সমসাময়িক এবং সমসাময়িকতাকে অতিক্রমকারী আধুনিক। কৃষকের পক্ষে আধুনিক হওয়াটা অসম্ভব।
জসীম উদ্দীনও খাঁটি বাংলার কবি। তিনি খাঁটি কবিও। তার জগতে গ্রাম আছে। গ্রামেই তার প্রধান আগ্রহ, তাকে পল্লিকবিও বলা হয়ে থাকে। পল্লির মানুষের মুখপাত্র তিনি। তাদের আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন ও দুঃখকে তার চেয়ে ভালোভাবে কে বুঝেছেন? আবার কিন্তু সত্য এটাই- তিনি সমাজ পরিবর্তনের জন্য লেখেননি। যদিও সমাজ-পরিবর্তনটা যে অত্যাবশ্যকীয়- এই সংবাদ তার কবিতার প্রতিটি পঙ্ক্তিতেই রয়েছে।
পরিবর্তনের ব্যাপারে সরাসরি লিখেছেন কাজী নজরুল ইসলাম। অমন করে আর কেউ লেখেননি বাংলা ভাষায়। সুকান্ত ভট্টাচার্যও লিখেছেন। সুকান্ত আরও লিখতেন, কিন্তু অসুস্থ সমাজ তাকে সুস্থ থাকতে দেয়নি। অত্যন্ত অল্প বয়সে তিনি চলে গেছেন। নজরুলের লেখক-জীবনও সংক্ষিপ্ত। সব মিলিয়ে ২২ বছরের হবে। কিন্তু ওই জীবনের পরিপূর্ণ ব্যবহার তিনি করে গেছেন। মেহনতি মানুষের কথা লিখেছেন। সেখানে শ্রমিক আছে, কৃষকও আছে। রেলস্টেশনে লাঞ্ছিত এক কুলির অপমানে তিনি জগৎজুড়ে মেহনতি মানুষের ক্রন্দনধ্বনি শুনতে পেয়েছেন। কিন্তু তিনি ক্রন্দনের কবি নন; কবি সমাজ বিপ্লবের। সে জন্য কেবল যে মেহনতিদের পক্ষে লিখেছেন, তা নয়; সমাজবদলের রাজনীতিতেও যোগ দিয়েছেন।
নজরুল কৃষকের দুঃখ নিয়ে লিখেছেন। দুটি পঙ্ক্তি উদ্ৃব্দত করাই হয়তো যথেষ্ট হবে। নজরুল প্রশ্ন করেছেন, 'জীবনে যাদের হররোজ রোজা, ক্ষুধায় আসেনি নিদ/ আধমরা সেই কৃষকের ঘরে এসেছে কি আজ ঈদ?' প্রশ্নটির ভেতর ধিক্কার আছে, রয়েছে যে-ব্যবস্থা কৃষককে আধমরা করে রেখেছে, সেই অন্যায় ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার আহ্বানও। এমন আহ্বান যদি শত-সহস্র কণ্ঠে সুসংগঠিতভাবে উঠত এবং তদানুযায়ী কাজ হতো, সমাজ বিপ্লব তাহলে অনিবার্য ছিল।
কৃষকের নিকট-প্রতিবেশী হচ্ছে জেলে। জেলেরাও চাষ করে। ক্ষেতে নয়; জলাশয় ও নদীতে। পদ্মা নদীর চাষিদের কথা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন তার 'পদ্মা নদীর মাঝি' উপন্যাসে। অমন করে আর কেউ বলেননি। মেহনতি মানুষের মুক্তির পথ খুঁজতে গিয়ে মানিক বুঝে নিয়েছেন, বিপ্লব ছাড়া কুলাবে না।
রবীন্দ্রনাথ সব সময়েই তাৎপর্যপূর্ণ। কোনো এক প্রশ্নে নয়, বহু প্রশ্নে এবং কৃষক প্রশ্নেও। তার সাহিত্যে কৃষক আছে, তবে প্রধান স্থান দখল করেছে এমন নয়। সেটা সম্ভব ছিল না। শ্রেণির পাহারা রবীন্দ্রনাথকেও নিবৃত্ত করেছে। যেমন করেছে রবীন্দ্রনাথের একজন নির্ভরযোগ্য মুখপাত্র গোরাকে। গোরা শেষ পর্যন্ত ব্রাহ্মণ্যবাদী জাতীয়তাবাদিতার সীমা লঙ্ঘন করে সর্বভারতীয় জাতীয়তাবাদে গিয়ে পৌঁছায়। কিন্তু তার জগতে কৃষক নেই; নেই মুসলমানও। বাস্তবতা এটাই।
শ্রেণির প্রাচীর রবীন্দ্রনাথকে পীড়া দিয়েছে। জমিদারিত্ব তার কাছে অন্যায় ও অসহ্য মনে হয়েছে। জমি তারই হওয়া চাই, জমিকে যে ভালোবাসে, জমিতে যে ফসল ফলায়। নিজের জমিদারি তিনি ত্যাগ করবেন বলেও ভেবেছেন; কিন্তু মুশকিলটা দেখেছেন এইখানে, জমি ছেড়ে দিলেই যে জমিদারি প্রথা উঠে যাবে, তা নয়, বরং বড় জমিদারের জায়গায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জমিদার গজিয়ে উঠবে; এবং কৃষক সেখানেই রয়ে যাবে, যেখানে সে ছিল। সমস্যার সমাধান অবশ্যই ছিল; যে সমাধান তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়ে স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করে এসেছিলেন। কিন্তু সে রকম বিপ্লবের পক্ষে দাঁড়ানো তো রবীন্দ্রনাথের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
যারা চাষ করে, হাল ধরে এবং উচ্ছেদ হয়ে যায় ভূমি থেকে, তাদের দুঃখ রবীন্দ্রনাথ জানেন, সে নিয়ে ভাবেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে এক হয়ে যে যাবেন, এমনটা তার পক্ষে সম্ভব নয়। মৃত্যুর কয়েক মাস আগে অসামান্য একটি কবিতা 'ঐকতান' লিখেছেন। সে কবিতার বেশকিছু পঙ্ক্তি আমাদের সবারই পরিচিত। বিশেষ করে তিনি বলছেন- কৃষাণের জীবনের শরিক যে জন,/ কার্যে ও কথায় সত্য আত্মীয়তা করেছে অর্জন/ যে আছে মাটির কাছাকাছি/ সে-কবির বাণী লাগি কান পেতে আছি।
গত আট দশকে রাষ্ট্রব্যবস্থায় প্রভূত পরিবর্তন এসেছে। ভারত ভেঙে পাকিস্তান, সেখান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ। এই দীর্ঘ সময়ে কৃষকের জীবন ও অধিকার নিয়ে পরিবর্তনের অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু কৃষাণের জীবনের শরিকের জন্য রবীন্দ্রনাথের অপেক্ষা এখনও শেষ হয়নি। কৃষক নিষিদ্ধ নয়; তবু নিষেধ থেকে গেছে।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়