ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলায় নিহত প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের লাশ আজ (সোমবার) দেশে আনা হচ্ছে। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফির্সাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী জানান, হাদিসুরের লাশ দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনা হচ্ছে। এরপর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।
হাদিসুর রহমানের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে। তিনি ওই এলাকায় নাদেরিয়া মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। চার ভাইবোনের মধ্যে হাদিসুর মেজো।
রবিবার (১৩ মার্চ) সকালে হাদিসুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের সব প্রস্তুত সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। তার বাড়ির উঠানে টাঙানো হয়েছে সামিয়ানা, বসার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে চেয়ার।
হাদিসুর রহমানের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স বলেন, ‘১২ দিন পর সোমবার দুপুর সোয়া ১২টায় তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ভাইয়ার লাশ শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। এরপর সরাসরি গ্রামের বাড়িতে রওনা দেবো।’
‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ তুরস্ক থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে জলসীমায় নোঙর করে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি উদ্ভূত হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। জাহাজটি ২৯ জন নাবিক-ক্রু নিয়ে ওখানেই নোঙর করা অবস্থায় আটকা পড়ে।
বাংলাদেশ সময় বুধবার (২ মার্চ) রাত ৯টা ২৫ মিনিট জাহাজে রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বিস্ফোরণে মারা যান জাহাজটির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। ঘটনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জাহাজে আটকে থাকা বাকি ২৮ নাবিক-ক্রু। এরপর টাগবোটের সাহায্যে তাদেরকে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় তীরে আনা হয়। তাদের রাখা হয় ইউক্রেনের অলভিয়া এলাকার একটি বাংকারে। সেখান থেকে শনিবার (৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় সড়কপথে যাত্রা শুরু করেন। রবিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ২৮ নাবিক-ক্রু রোমানিয়ার একটি হোটেলে পৌঁছান।
গত ৯ মার্চ ২৮ নাবিক-ক্রু দেশে ফিরেছেন। বুখারেস্ট থেকে টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে এদিন দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তারা।