ব্যাটিংয়ের
পর বোলিংয়েও এলো সাফল্য। মেহেদী হাসানের মিরাজের সেঞ্চুরিতে পাওয়া শক্ত
ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বোলিংয়ে আলো ছড়ালেন মোস্তাফিজুর রহমান। দুয়ে মিলে
চট্টগ্রামের টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা হলো বাংলাদেশের। স্বাগতিকদের প্রথম
ইনিংসে করা ৪৩০ রানের পর ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বৃহস্পতিবার দিন শেষ
করেছে ২ উইকেটে ৭৫ রানে। প্রথম ইনিংসে সফরকারীরা এখনও পিছিয়ে ৩৫৫ রানে।
অনেকদিন
পর টেস্ট একাদশে সুযোগ হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানের। টিম ম্যানেজমেন্টের
আস্থার জবাবটা তিনি বল হাতে নিয়েই দিয়েছেন। বাঁহাতি পেসারের জোড়া আঘাতে ২৪
রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা। তবে শুরুর ধাক্কা সামলে অধিনায়ক
ক্রেগ ব্র্যাথওয়েটের ব্যাটে ভর করে আর কোনও বিপদ ছাড়াই দিন পার করে দিয়েছে
সফরকারীরা।
হাফসেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে থাকতে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ
করেছেন ব্র্যাথওয়েট। ৮১ বলে খেলা হার না মানা ৪৯ রানের ইনিংসটি তিনি সাজান ৭
বাউন্ডারিতে। তার সঙ্গে তৃতীয় দিন শুরু করবেন ১৭ রানে অপরাজিত থাকা
এনক্রুমা বনার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। মোস্তাফিজের
আঘাতে ১১ রানে হারায় প্রথম উইকেট। বাঁহাতি পেসারের বলে এলবিডাব্লিউয়ের
শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ৩ রান করা জন ক্যাম্পবেল।
সীমিত ওভারের
েেত্র মোস্তাফিজ প্রথম পছন্দ থাকলেও লাল বলের ক্রিকেটে বারবার হয়েছেন
উপেতি। ২০১৯ সালের মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে সবশেষ টেস্ট খেলা মোস্তাফিজের
লাল বলের স্কিলের ঘাটতি থাকার কথা জানিয়েছিলেন প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো।
যে কারণে গত বছরের ফেব্রুয়ারির পাকিস্তান সফরের স্কোয়াডে জায়গা হয়নি তার।
ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপে স্কোয়াডে ফিরলেও ডোমিঙ্গো জানিয়েছিলেন, বাঁহাতি
পেসারের বোলিং নিয়ে কাজ করাতেই শুধু দলে রাখা হয়েছে।
সেই তিনি লাল বলের
ক্রিকেটে ফিরতেই করলেন উইকেট উদযাপন। ক্যাম্পবেলকে বিদায় করার খানিক সময়
পরই আবার উইকেট আনন্দে মাতেন তিনি। এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেই এই পেসার
ফেরান ওয়ান ডাউনে নামা শেন মোসেলিকে (২)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর তখন ২
উইকেটে ২৪।
ওই জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়েন ব্র্যাথওয়েট ও বনার। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ সামলে দিনের বাকি সময়টা পার করে দিয়েছেন তারা।
এর
আগে মিরাজের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক তো দূরে থাক, ঘরোয়া ক্রিকেটেও কখনও তিন অঙ্কের ঘরে যাওয়া হয়নি
মিরাজের। সেই তিনিই লম্বা বিরতির পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই পেয়ে গেলেন
সেঞ্চুরি। তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে অলআউট হওয়ার আগে
স্বাগতিকরা করে ৪৩০ রান।
জোমেল ওয়ারিকানের বলে ২ রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ
করেন মিরাজ। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করতে লেগেছে তার ১৬০ বল।
রাকিম কর্নওয়ালের বলে আউট হওয়ার আগে ডানহাতি ব্যাটসম্যান খেলে যান ১০৩
রানের ঝলমলে ইনিংস। ১৬৮ বলের স্মরণীয় ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৩ বাউন্ডারিতে।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার আউটে শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। এছাড়া
হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। খেলেছেন ৬৮ রানের ইনিংস। লিটন দাস আউট
হয়েছেন ৩৮ রানে। আর আগের দিন ফিফটি পেয়েছিলেন সাদমান ইসলাম (৫৯)।