Published : Wednesday, 7 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 07.04.2021 12:39:49 AM
নিজস্ব
প্রতিবেদক: করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত দুদিকেই নতুন রেকর্ড গড়ল দেশ। গত ২৪
ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ২১৩ জনের। আর মারা গেছেন ৬৬ জন। এর আগে
করোনায় দেশে এত মৃত্যু দেখা যায়নি। গত বছরের ৩০ জুন মারা গিয়েছিলেন ৬৪ জন।
সোমবার করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ৭৫ জনের। তার আগের দিন রোববার শনাক্ত
হয়েছিল ৭ হাজার ৮৭ জনের, যা দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এক দিনে ছিল
সর্বোচ্চ। গতকাল মঙ্গলবার সংক্রমণ শনাক্তে গত দুদিনকে ছাড়িয়ে গেল। সে
হিসাবে টানা তিন দিন ধরে করোনায় সংক্রমণ শনাক্ত ৭ হাজারের বেশি।
আজ
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো
হয়। গত সোমবার সকাল আটটা থেকে মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত) নমুনা পরীাও
হয়েছে সবচেয়ে বেশি, ৩৪ হাজার ৩১১ জনের। নমুনা পরীা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের
হার ২১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
এ পর্যন্ত দেশে মোট ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬৫২
জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯ হাজার ৩৮৪ জন।
মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩৮৩ জন।
গত শনিবার দেশে করোনায়
সংক্রমিত ৫ হাজার ৬৮৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। আর মারা গিয়েছিলেন ৫৮ জন।
তার আগের দিন শুক্রবার শনাক্ত হয়েছিল ৬ হাজার ৮৩০ জনের। সেদিন ৫০ জনের
মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম
করোনা শনাক্তের কথা জানায় সরকার। গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ
বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের
ওপরে ছিল। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে।
গত জুন থেকে আগস্ট—এই
তিন মাস করোনার সংক্রমণ ছিল তীব্র। মধ্যে নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বাড়লেও
বাকি সময় সংক্রমণ নি¤œমুখী ছিল। এ বছর মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয়
ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। মধ্যে কয়েক মাস ধরে
শনাক্তের চেয়ে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল।
কিন্তু মার্চ মাস থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে।
কোনো
দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঠিক করা
কিছু নির্দেশক থেকে বোঝা যায়। তার একটি হলো রোগী শনাক্তের হার। টানা দুই
সপ্তাহের বেশি রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। এ বছর ফেব্রুয়ারি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে ছিল। দুই মাস পরে গত ১০ মার্চ দৈনিক শনাক্ত
আবার হাজার ছাড়ায়। এরপর দৈনিক শনাক্ত বাড়ছেই।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা
বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি খারাপের দিকে
যাচ্ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ বেশ কিছু বিধিনিষেধসহ ১৮ দফা
নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে ঘরের বাইরে গেলে মাস্কের ব্যবহার
অন্যতম। কিন্তু সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকলেও জনগণের মধ্যে
স্বাস্থ্যবিধি মানার েেত্র এখনো উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্যবিদেরা
বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প
নেই।