
মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাছুম ||
আবদুল মতিন খসরু ১৯৫০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়ার উপজেলার মিরপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম- আলহাজ্ব মৌলভী আবদুল মালেক। মাতা- জাহানারা বেগম। ব্যক্তি জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। তার সন্তানদের মধ্যে উম্মে হাবিবা মুনমুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে গইইঝ পাশ করে সরকারি ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ও ছেলে আবদুল মুনিম ওয়াসিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার-এ নিয়োজিত। প্রথম স্ত্রী ফৌজিয়া খসরু তিনি আইন মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে গলায় ক্যান্সার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর এক সময়ের ঢাকা জেলা জজের মেয়েকে দ্বিতীয় বিবাহ করেন।
তিনি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মাধবপুর হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭০ সালে শতবর্ষী কুমিল্লা ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ হতে বাণিজ্য বিভাগে ¯œাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৭৪-৭৬ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়ন করেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ পড়াকালীন সময়ে তাৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৭৬ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কুমিল্লা ল’ কলেজ হতে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। আইন পেশায় সনদ পান-১৯৭৮ সনের ৯ই জুন। এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু ১৯৭৮ সনের ২২ই জুন কুমিল্লা জর্জকোর্ট তথা কুমিল্লা বারে যোগদান করেন। ১৯৮২ সনে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টে আইন পেশায় যোগদান করেন। দীর্ঘ ৪১ (১৯৮০-২০২১ পর্যন্ত) বছর অত্যন্ত সুনামের সাথে বাংলাদেশ হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টে আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন।
তিনি বিভিন্ন সময় থানা ও জেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৯২-৯৫সন পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্বপালন করেন। এছাড়া তিনি অখ- কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদকের দায়িত্ব অত্যন্ত সুনামের সাথে পালন করেন। সর্বশেষ ২০১৭ সনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম-সভাপতি ম-লীর সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং মৃত্যুর আগপর্যন্ত অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তৃণমূল থেকে উঠে এসে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির চূড়ান্ত অবস্থানে গিয়েছিলেন। জনাব এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু ১৯৯১ সনে বৃহত্তর কুমিল্লা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিপুল ভোটে কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে আবার ১৯৯৬ সনে কুমিল্লা-৫ আসন হতে কুমিল্লা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পুনরায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের প্রথমে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, কিছু দিন পরে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব অত্যন্ত সকল সুনামের সাথে পালন করেন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আবদুল মতিন খসরুর অবদান অপরিসীম। তিনি ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) এবং অবিভক্ত বুড়িচং থানার কমান্ডারের সাহসী দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
তিনি ১৯৯৬ সনের ১২ নভেম্বর আইনমন্ত্রী থাকাকালে মানব সভ্যতার মানবতা বিবর্জিত হত্যার দায় মুক্তির পৃথিবীর জঘন্য নিকৃষ্ট কালো আইন ‘ইনডেম্নিটি অধ্যাদেশ টি’ বাতিল করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের বিচারিক কার্যক্রম উন্মুক্ত করেন। ঐ দিন সংসদে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বিল রিপিল করতে গিয়ে আইনটি বাতিলের পক্ষে যে যুক্তি নির্ভর ও সারগর্ভ বক্তৃতা দিয়েছিলেন সম্ভবত উনার ৫১ বছরের রাজনৈতিক জীবনের শ্রেষ্ঠতম ভাষণ হিসেবে বাঙালি জাতির কাছে চিরজাগরূক হয়ে থাকবে অনন্তকাল ধরে। ঐদিন সংসদ অধিবেশন পিন-পতন নিরবতা ও স্তব্দতা হয়েছিল মতিন খসরুর আবেগঘন ভাষণে। এ সময় সংসদনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের যোগ্যকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রী পরিষদের অনেক সদস্য বর্গ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। তখন প্রধানমন্ত্রীর চোখের পানি অশ্রুধারায় প্রবাহিত হয়েছে যা সমগ্র বাঙালি জাতি সচক্ষে দেখেছে। এ এক অভূত পূর্ব ঘটনা। রাজনীতিতে তিনি স্থানীয় থেকে জাতীয়, জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বিচরণ করেছেন অত্যন্ত সদর্পে। যেমন: জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পিকারের দায়িত্বপালন কালে উনাকে যখন স্পিকারের আসনে দেখি তখন আমরা বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ার গণ-মানুষের নেতা হিসেবে সমগ্র বাংলাদেশ (ডযড়ষব ঈড়ঁহঃৎু) অথবা পুরো জাতির (ডযড়ষব ঘধঃরড়হ) প্রতিনিধিত্ব করতে দেখি। আবার উনি যখন বৃটেনের আইন সভায় (ঐড়ঁংব ড়ভ খড়ৎফং) বাংলাদেশের পক্ষে/বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন তখন আমাদের গর্বে বুক ফুলে উঠে তিনি আর কেউ নন, আমাদের মা, মাটি ও মানুষের কৃতিসন্তান, সমগ্র বাংলার গর্বের ধন আবদুল মতিন খসরু। উনাকে কেবল আমরা একজন সাধারণ সংসদ সদস্য বলেই ক্ষান্ত হবনা, উনি আমাদের দেশের একজন গর্বের আইন প্রণেতাও বটে।
আরেকটি ঘটনা উল্লেখ না করে পারছিনা-একজন সংসদ সদস্যের প্রশ্নোত্তরের জবাবে তৎকালীন স্পিকার পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আবদুল হামিদের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তৎকালীন সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি যে রুলজারি করেছিলেন এ নিয়ে জাতীয় সংসদে তুমুল হট্টগোল লেগে যায়। যার ফলে আইন ও বিচার বিভাগ মুখোমুখি অবস্থানের সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় এদ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য জাতীয় সংসদের ৩০০জন সদস্যের মধ্য হতে তৎকালীন স্পিকার এডভোটেক আবদুল হামিদ এমপি দুজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টরিয়ানের সহায়তা ও পরামর্শ চান। এ দুজনের মধ্যে একজন হলেন আমাদের পাঁচ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক সফল আইনমন্ত্রী জননেতা এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু।
বিশেষ করে অভিজ্ঞ পার্লামেন্টিয়ান বলতে যা বুঝায় সকল গুণাবলী তার মধ্যে বিরাজমান ছিল। তিনি প্রচুর পড়াশুনা ও পরিশ্রম করতেন। তিনি সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডার বা কার্যপ্রণালীর বিভিন্ন বিধির উপর যে বক্তব্য উপস্থাপন করতেন যা ছিল অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত, অকাট্য প্রমাণে ভরপুর। সংসদে তার পরিশুদ্ধ, মার্জিত পরিশিলীত শব্দ চয়ন যা ছিল পুরো বাঙালি জাতির জন্য অনুকরণী ও অনুস্মরণীয়। তিনি প্রয়াত এডভোকেট সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এম.পি, এডভোকেট সুধাংশু শেখর হালদার এমপি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এমপি ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান, সর্বোপরে এক বড় মাপের সফল আইন প্রনেতা ও বটে। তিনি তার সংসদীয় জীবন (১৯৯১-১৯৯৬, ১৯৯৬-২০০১, ২০০৮-২০১৪. ২০১৪-২০১৮ এবং ২০১৮-২০২১ পর্যন্ত প্রায় ২৩বছরের ইতিহাসে সংসদ নেত্রী জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মহান জাতীয় সংসদে বিভিন্ন সময় ফোর নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বাস্তব সম্মত ও যুক্তিসঙ্গত জ্ঞানগর্ভ আলোচনা ও রাখতেন। এমনকি নিজের দলের বিভিন্ন বিষয়ের উপর যুক্তিসঙ্গত গঠন মূলক সমালোচনায় মুখর ছিলেন। তাঁর মত এমন পরিচ্ছন্ন, জ্ঞানী, প-িত ও পরিশীলিত রাজনীতি বিদ পাওয়া বর্তমান সমাজে অত্যন্ত দুষ্কর। বিশেষ করে, বর্তমান ইলেকট্রনিক নামক বিভিন্ন মিডিয়াতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক, কিংবা দলীয় রাজনীতি, ইস্যু নিয়ে টকশোতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী। তিনি তার শানিত যুক্তি, গঠনমূলক বক্তব্যে ছিলেন সিদ্ধহস্ত, যা মনের মনিকোঠায় ঠাই দিবে অগনিত টেলিভিশন দর্শকদের। দীর্ঘ ৪১ বছরের আইন অঙ্গন ও অত্যন্ত সুপরিচি মুখ ছিলেন এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি অনেক জটিল ও কঠিন মামলা থেকে জিতিয়ে এনেছেন। তিনি হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্ট বিভাগের বিভিন্ন মামলার বাদ/আসামি পক্ষের শুনানীতে তাঁর সাবমিশন (ঝঁনসরংংরড়হ) ছিল অন্যন্ত চমৎকার ও অকাট্য দালিলিক প্রমাণে ভরপুর। তিনি তাঁর বক্তব্য উপস্থাপনে দেশ-বিদেশের বহু উল্লেখযোগ্য ও ঐতিহাসিক মামলার রেফারেন্স তুলে ধরতেন অত্যন্ত সাবলীলভাবে। এজন্য তিনি দল-মত, জাত-পাত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আইন অঙ্গনে ছিলেন একজন সর্বজনগ্রাহ্য ও সার্বজনীন সুবিদিত আইনজীবী। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য। নিউইয়র্ক ভিত্তিক সংগঠন ‘পার্লমেন্টিরিয়ান ফর গ্লোবাল একশন’ আন্তর্জাতিক এর সদস্য হিসেবে ১৯৯৩ সনে রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধমূলক আন্তর্জাতিক সংগঠন নেদারল্যন্ডে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে যোগদান করেন।
বাংলাদেশ স্কাউট সংসদীয় সংস্থার সভাপতি হিসেবে ১৯৯৪ সালে চিলির সান্তিয়াগোতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড স্কাউট পার্লামেন্টিরিয়ান ইউনিয়ন সাধারণ সভায় প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৯২ সনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগদেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ সভায় যোগদান এবং জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘে মানবাধিকার আলোচনায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব প্রদান করেন। ১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত ম্যানিলায় বার্ষিক এশিয়ান ল’ কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। ২০০০ সনে টেকিওতে অনুষ্ঠিত এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক মানবাধিকার কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন।
তাঁর অভিজ্ঞ ও ত্যাগী রাজনৈতিক মনোভাবও কর্মকা-ে সন্তুষ্ট হয়ে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম মেম্বারে অধিষ্ঠিত হন। তিনি বর্তমান জাতীয় সংসদের সভাপতি ও পার্লামেন্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি-আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ছিলেন সাবেক সফল আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিমকোটের সিনিয়র আইনজীবী। সদস্য ছিলেন, ওঈঅঅচ, সিনিয়র পরামর্শক ও ডিপুটি ডাইরেক্টর ছিলেন ওঊঝঈঙ; সাবেক সহসভাপতি ছিলেন এশিয়ান আফ্রিশন লিগ্যাল কনসাল টেটিভ কমিটি (অঅখঈঈ)।
মন্ত্রী থাকাকালীন সময় ও প্রায় ২৩বছরের সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে তিনি বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ার, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মন্দির, রাস্তা-ঘাট, পুল-কালভাটসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও অবকাঠামো গঠনে উন্নয়নের রূপকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার নামে বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায় ৪টি কলেজ, বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও কয়েকটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত। বাকশীমুল ইউনিয়নের চম্পার দীঘির পশ্চিমপাড়ে অত্যন্ত মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে সর্বপ্রথম ১৯৯৭ সালে তৎকালীন স্বর্ণপদক প্রাপ্ত কয়েকবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান জনাব সাজ্জাদ হোসেন প্রতিষ্ঠা করেন কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু কলেজ। পরবর্তীতে সাবেক আইনমন্ত্রীর বদান্যতায়ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়- বুড়িচং এর কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু ও ব্রাহ্মণপাড়ায় নাগাইশ বঙ্গবন্ধু কলেজ সরকারি করেন। ইতিপূর্ব এই দুই উপজেলার কোন সরকারি কলেজ ছিলনা। কর্মে-ধ্যানে, মনে-প্রাণে পুরোদস্তুর আপাদ-মস্তকে অভিজ্ঞ এ রাজনীতিক ও আইনজীবী সম্প্রতি গত (১০-১১) মার্চ ২০২১ সনের সুপ্রিমকোর্টের বার এসোসিয়েশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্চের ১৫ তারিখ সংসদ ভবনের করোনা বুথ সেন্টারে করোনা পরীক্ষার জন্য রক্তের স্যাম্পল দেন। রক্তের পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ আসে। ঐদিনই তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ঈগঐ-এ ভর্তি হন। দীর্ঘ এক মাস ঈগঐ-এ দুদফা ওঈট তে থেকে গত ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে বেলা ১১টায় লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। ১৪ই এপ্রিল ২০২১ পহেলা বৈশাখ, রোজ বুধবার বিকালে ৪টা ৫০ মিনিটে ঈগঐ হাসপাতালে প্রথম রমজানের দিন মহান আল্লাহপাকের ডাকে সাড়া দিয়ে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহে ওয়াইন্নাইলাইহের রাজিউন। বাংলাদেশের সংসদীয় ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির ইতিহাসে, হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্ট আইন অঙ্গনের ধ্রুবতারা, রাজনীতির মহীরূহ, রাজনীতির বাতিঘর, আমাদের প্রিয় নেতা, বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়ার গণমানুষের নেতা, ও উন্নয়নের রূপকার, সাবেক সফল আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী, সুপ্রিমকোর্টের নব-নির্বাচিত সভাপতি, শহীদ মর্যাদায় অভিসিক্ত হবেন। হে আল্লাহ, মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রিয় নেতা সবার প্রিয় খসরু ভাইকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুণ।
লেখক: সিনিয়র প্রভাষক, কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু সরকারি কলেজ, বুড়িচং
মোবাইল-০১৭১৭-৭৩৯৭৪২