Published : Monday, 10 May, 2021 at 12:00 AM, Update: 10.05.2021 12:54:33 AM
তানভীর দিপু:
গতকাল ৩ জনসহ
কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৪ শ’ জন। করোনার দুই
ধাক্কায় সর্বমোট এই মৃত্যুর বেশির ভাগই পঞ্চাশোর্ধ এবং প্রাণহানির অধিকাংশই
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। এদের মধ্যে বেশির ভাগই কুমিল্লা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কুমিল্লা সিভিল সার্জন
কার্যালয়ের তথ্য মতে, সর্বশেষ ১ শ’ জনের মৃত্যু হয়েছে ৩৫ দিনে। কুমিল্লায়
সর্বমোট করোনায় আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ১২ হাজার ৩শ’ ৩৩ জন। এর মধ্যে
সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৩৬ জন।
জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ বলেছে, করোনার
দ্বিতীয় ধাক্কার শুরুর চেয়ে এখন আক্রান্ত শনাক্তের হার অনেকটা কম আছে। আর
আক্রান্ত কম হলেই মৃত্যুর সংখ্যা কমানো যাবে। কিন্তু ঈদের মার্কেটে যে
পরিমান মানুষের ভিড় তা কিছু দিনের মধ্যেই শানাক্তের হার বাড়িয়ে দিতে পারে।
এছাড়া জনসংখ্যা ঘনত্বের অনুপাতে আক্রান্ত বাড়লে কুমিল্লা আশংকাজনক
পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে।
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা
ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সরকারি কার্যক্রম বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. মোঃ মহিউদ্দিন জোর দাবি জানিয়ে বলেন, কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরো একটি নতুন অক্সিজেন প্লান্ট ও করোনা পরীক্ষার
জন্য মাইক্রো বায়োলজি ল্যাব স্থাপন করা হোক। তাহলে কুমেক করোনা ইউনিটে ৩০
বেডের আইসিইউ করা সম্ভব হবে। যা কুমিল্লার জন্য খুবই প্রয়োজন। কারন,
পাশ্ববর্তী জেলা থেকেও করোনা আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লায় চিকিৎসা নিতে আসছে।
এছাড়া কুমিল্লার চিকিৎসকদের আইসিইউ ম্যানেজম্যান্ট ও ক্রিটিক্যাল
ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। প্রয়োজনে সরকারিভাবে অনলাইনে তাদের এই
প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে, যা সংকটময় মুহুর্তে কাজে আসবে।
এদিকে
কুমিল্লায় করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যা বাড়তে থাকলেও ঈদের বাজার
এবং শপিংমল গুলোর চিত্র দেখে এই পরিসংখ্যান বুঝার কোন উপায় নেই। ঈদ শপিংয়ে
ব্যতস্ত কুমিল্লার মানুষ ভিড় করেই কিনছেন ঈদের জামা-কাপড়। শপিংমল বা দোকানে
গাঁ ঘেষেই চলছে কেনাকাটা। অহরহই দেখা যাচ্ছে মাস্ক ছাড়া মানুষের উপস্থিতি।
এদিকে দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের করোনা ভাইরাস শনাক্তের ভয়ও নেই
কুমিল্লাবাসীর মধ্যে। সবাই করোনা মহামারি ভুলে ঈদের আনন্দ উপভোগে ব্যস্ত।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের করোনার চিত্র তুলে ধরে কুমিল্লার জনপ্রতিনিধি ও
প্রশাসন বারবার সতর্ক করছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য।
জেলা সিভিল
সার্জন মীর মোবারক হোসাইন জানান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও সদর
হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং বিভিন্ন
কিনিকগুলোতেও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে বার বারই বলা হচ্ছে মাস্ক ব্যবহারের
কোন বিকল্প নাই। যে কোন জনসমাগম এলাকায় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
এছাড়া নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।