ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
লাকসামে কলেজ ছাত্র হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ মিছিল
Published : Sunday, 23 May, 2021 at 12:00 AM
ফারুক আল শারাহ:
ঢাকা আহসান উল্লাহ কলেজের মেধাবী ছাত্র ও ডিপ্লোমা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম সোহান (২৫) হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিােভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোহান কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলাধীন নগরীপাড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। তার মেধাবী অন্য দুই ভাই কানাডায় অধ্যয়নরত। সোহানও কিছুদিনের মধ্যে কানাডায় চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই তুচ্ছ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘ দেড়মাসের যাবত ঢাকা মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ১৮ মে রাত ১০:৫০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
মামলার অভিযোগ ও সোহানের পিতা রুহুল আমিন জানান, উপজেলার মুদাফরগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ের নগরীপাড়া গ্রামের আবদুল ওয়াদুদ নামীয় এক ব্যক্তি একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী চিকুনিয়া গ্রামের মিজান হাজারী নামক এক ব্যাক্তির নিকট টাকা পাওনা ছিল। গত ৮ এপ্রিল দুপুরে সোহান মুদাফরগঞ্জ বাজারে তার বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দুপুরের খাবার খেতে তার বাড়ির উদ্যেশ্যে রওয়ানা হলে নগরীপাড়া গ্রামের পাওনাদার আবদুল ওয়াদুদ তার অন্যান্য সঙ্গীরা সহ জোর করে চিকোনিয়া গ্রামের মিজান হাজারীর কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করতে সোহানকে মিজান হাজারীর চিকোনিয়ার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মিজান হাজারী ও তার লোকজন ধারালো বটি দা দিয়ে সোহানের মাথায় কুপিয়ে মারাত্বক জখম করে। সোহান তখন মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি করতে শুরু করে। এমতাবস্থায় পাওনাদার ওয়াদুদ ও দেনাদার মিজান হাজারী ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। গুরুতর আহত মেধাবী ছাত্র সোহানকে সাথে থাকা অন্যরা প্রথমে মুদাফরগঞ্জের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে সোহানকে কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রমার কর্তব্যরত ডাক্তাররা সোহানের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে দীর্ঘ দেড়মাস চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ১৮ মে সোহান ইন্তেকাল করেন। এরমধ্যে সোহানের পিতা রুহুল বাদী হয়ে মিজান হাজারী, আবদুল ওয়াদুদ সহ অন্য তিন জনকে বিবাদী করে ২৫ এপ্রিল লাকসাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ৩২৬ ধারায় লাকসাম থানা পুলিশ উক্ত অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা তদন্ত করার দায়িত্ব দেন লাকসাম থানার সাব ইনসপেক্টর আমিরুল ইসলামকে।
মামলার বাদী মৃত সোহানের পিতা রুহুল আমিন সুত্রে আরও জানা যায়, মামলার তদন্তকালীন সময়েই কয়েকজন বিবাদী আগাম জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে থাকে। এরই মধ্যে গত ১৮ মে সোহানের মৃত্যু হলে বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ােভের সৃষ্টি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল ১১ টায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে মেধাবী ছাত্র সোহান হত্যার বিচারের দাবীতে কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মুদাফরগঞ্জ বাজারে বিশাল মানববন্ধন ও বিােভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিােভ মিছিলের এক পর্যায়ে সোহানের পিতা রুহুল আমিন রাস্তার উপর বসে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন "আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের কাছে আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি ন্যায় বিচার চাই, আমার ছেলেকে যারা অন্যায় ভাবে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই "
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লাকসাম থানার সাব ইনসপেক্টর আমিরুল ইসলামের সাথে তাঁর সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, "মামলাটি আমরা প্রথমে ৩২৬ ধারায় রুজু করেছি। এখন যেহেতু সোহান মারা গেছে সে েেত্র সোহানের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট পাওয়ার পর মামলাটি ৩০২ ধারায় রজু করার জন্য আমরা আদালতে আবেদন করবো।