মোঃ হুমায়ুন কবির মানিক,
কুমিল্লার লাকসামে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ শাহিদা বেগম জান্নাতকে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শুক্রবার দুপুরে লাকসাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে পুলিশ ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে স্থানীয়দের। নিহতের বাবা-মার অভিযোগ, তাদের মেয়েকে হত্যা করে সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এ ঘটনায় জান্নাতের মা পারুল বেগম বাদী হয়ে গত শুক্রবার (৪ জুন) রাতে স্বামী সাইফুল ও শশুর-শাশুড়ীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লাকসাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার হওয়ার আগে পুলিশ জান্নাতের স্বামী সাইফুল ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার করে শনিবার কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮ মাস আগে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে একই উপজেলার ইছাপুরা গ্রামের সৈয়দ আহমেদের মেয়ে শাহিদা আক্তার জান্নাতের বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার পর থেকেই তার শশুর বাড়ী ইরুয়াইন উত্তর পাড়া স্বামীকে নিয়ে তাদের সংসার চলতে থাকে। বিয়ের তিন মাস পর গর্ভবতী হন জান্নাত আক্তার। তিনি বর্তমানে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিয়ে হওয়ার পর থেকেই সাইফুল ও তার মা-বাবা, ভাই বোন প্রায় সময় যৌতুকের জন্য জান্নাতকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন। তাকে তার মা-বাবার কাছে যেতে দেয়া হতো না। গত শুক্রবার সকালে সকালে নিজ ঘরের ভেতরে শাহিদাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে লাকসাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লাকসাম থানার এসআই মাকসুদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১১ (ক) ৩০ এর ধারায় যৌতুকের জন্য মারধর করে হত্যা ও সহয়তা করার অপরাধ মামলা হয়েছে। তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শ্বশুর-শাশুড়ি ও দেবর-ননদ পলাতক রয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে নিশ্চিত করে বলা যাবে, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।