বগুড়ায় কাহালু উপজেলায় শাহিন নামে এক যুবককে হত্যার চার বছরের মাথায় রহস্য উদঘাটন হয়েছে। চুরি করতে গিয়ে পূর্ব পরিকল্পনায় সহযোগীদের হাতে খুন হন তিনি। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (৫ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কাহালু উপজেলায় ২০১৭ সালের ১১ জুন রাতে শিবগঞ্জের শাহিন নামের একজনকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় স্ত্রী নূর বানু বাদী হয়ে কাহালু থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ মামলায় কাহালু থানা পুলিশ প্রথমে দায়িত্ব দেয়া হয় পুলিশ পরিদর্শক আনিছুর রহমানকে। কিছুদিন পরে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়ে দায়িত্ব আসে তৎকালীন কাহালু থানার ওসি (পরিদর্শক) মাহমুদ হাসানের কাছে। তদন্ত শেষে তিনি এই মামলায় চূড়ান্ত (কোনো হত্যাকারী পাওয়া যায়নি) প্রতিবেদন দাখিল করেন আড়াই বছর আগে।
মাহমুদ হাসান বলেন, ‘আমি তদন্ত করে ওই মামলায় কোনো ক্লু পাইনি। এটা আমার ব্যর্থতা। পিবিআিই পেয়েছে এটা তাদের সফলতার। এর চেয়ে আমার বেশি কিছু বলার নেই।’
এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পর আদালত নিজের ইচ্ছায় এই মামলা তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের ওপর দায়িত্ব দেন। পরে এই মামলা তদন্তের ভার পান পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন। দীর্ঘদিন তদন্ত করে তিনি এই হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন অনুসন্ধান শেষে গত ২ জুন কাহালু খামারপাড়া এলাকার রিপন সরদারকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। পরে পুলিশের কাছে তিনি শাহিন হত্যার কথা স্বীকার করেন। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও তিনজনের নাম বলেন। এরা হলেন- কাহালুর নাটাইপাড়া এলাকার আবুল কালাম আজাদ ওরফে তারা মিয়া, সোহরাব হোসেন ও আনিসুর রহমান পাপন।
শাহিনসহ হত্যার দিন তারা পাঁচজনে কাহালু উপজেলার এক বাড়িতে চুরি করতে যান। ওই বাড়ির মালিক রিপনের মামা আকতার ওরফে বুলু। ৯ বিঘা জমির লোভে বুলুকে বিপদে ফেলতে তার ওই বাড়িতে শাহিনকে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলায় বুলুকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা ছিল রিপন ও তারা মিয়ার।
পিবিআই পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন বলেন, ‘ক্লু-লেস এই হত্যা মামলা তদন্ত করতে অনেক সময় লেগেছে। এটা পিবিআইয়ের একটা বড় অর্জন।’