কথায় বলে, ‘বৃক্ষ তোমার নাম কী? ফলে পরিচয়।’ তার ভক্ত ও সমর্থকদের একটা অংশ তাকে ‘সাইলেন্ট কিলার’ বলে সম্বোধন করেন। মানে নীরব ঘাতক। কোন ক্রিকেটারকে ঘাতক বলে ডাকা কতটা যুক্তিযুক্ত ও শিষ্টাচার? তা নিয়ে একটা ছোটখাট বিতর্ক থেকেই যায়।
তারপরও আসল কথা হলো ভক্তরা বোঝাতে চান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কৃতিত্ব, অর্জন, প্রাপ্তি এবং দলের জন্য অবদান সবই নীরবে-নিভৃতে, ততটা চোখে পড়ে না। কিন্তু আসলে তিনি দলকে অনেক কিছু দিয়েছেন। পঞ্চপান্ডবের বাকি ৪ জনের তুলনায় রিয়াদের অবদানও কিছু কম নয়।
ইতিহাসও সাক্ষী দিচ্ছে বিশ্বকাপের মত আসর আসর আর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মত বড় মঞ্চে তিন-তিনটি শতক যার, তার অর্জনকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই? আসলে রিয়াদ হচ্ছেন আনসাং হিরো, ‘অগোচর নায়ক।’
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের মত জিম্বাবুয়ান দলেও কিন্তু একজন ‘অগোচর নায়ক’ আছেন। আসলে তিনিই প্রকৃত ঘাতক! কিন্তু রিয়াদের মত তার কার্যকরিতাও তেমন চোখে পড়ে না। তাকে নিয়ে কথাবার্তা, আলোচনাও কম।
তিনি লুক জঙউই। ২৬ বছরের এ মিডিয়াম পেসার আসলে নীরব ঘাতক। যিনি সবার অগোচরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বধ করে যাচ্ছেন।
অথচ কথা বেশি হচ্ছে আরেক পেসার মুজারাবানিকে নিয়ে। জিম্বাবুয়ানদের মধ্যে এ সময়ে সবচেয়ে জোরে বল করেন মুজারাবানি। তার বলে কাজও আছে। খুব ভাল জায়গায় বল করার ক্ষমতাও আছে মুজারাবানির। তিনিও প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সমীহ আদায় করে নিচ্ছেন।
বাংলাদেশের জিম্বাবুয়ে সফরেও মুজারাবানি জিম্বাবুয়ানদের অন্যতম সফল বোলার। কিন্তু লুক জঙউই হলেন উইকেট টেকিং বোলার। তার বলে মুজারাবানির চেয়ে গতি কম, সুইংও কম। কিন্তু বৈচিত্র বেশি। ব্যাটসম্যানের মনোভাব বুঝে বল করে সাফল্য তুলে নিতে পারেন, নিচ্ছেনও।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচের এ পেসার কোন উইকেট পাননি। বাংলাদেশ জিতেছে ৮ উইকেটে। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাঁহাতি স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৩ উইকেট পেলেও পেসার জঙউইও ৩ উইকেট দখল করে বাংলাদেশকে হারের পথে ঠেলে দিয়েছেন।
শেষ দিকে তিন বাঁহাতি শামীম পাটোয়ারী, সাইফউদ্দিন আর তাসকিন- তিনজনই জঙউইয়ের বলে আউট হয়েছেন।
এইতো মাস তিনেক আগে জিম্বাবুয়ের মাটিতে তিন ম্যাচে টি-টোয়েন্টি সিরিজের একটিতে হেরে গেছে বাবর আজমের পাকিস্তান। সেই ম্যাচে পাকিস্তান মাত্র ৯৯ রানে অলআউট হয়েছিল এই জঙউইয়ের বিধ্বংসী বোলিংয়ের মুখেই।
জঙউই একাই পতন ঘটিয়েছিলেন ৪ (১৮ রানে) উইকেট। পাকিস্তানের সাথে তিন ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজেও জঙউই ছিলেন জিম্বাবুয়ের সফলতম বোলার। তার ঝুলিতে জমা পড়েছিল (২/২৪, ৪/১৮ ও ৩/৩৭) ৯ উইকেট।
কাজেই আজকের ম্যাচেও হয়তো জঙউই হতে পারেন বড় বাঁধা। তাকে দেখে খেলতে পারলে এবং তার বলে যতটা সম্ভব কম উইকেট খোয়ানোটার ওপর টাইগারদের সাফল্য নির্ভর করবে।