বরগুনার পাথরঘাটা থেকে একসঙ্গে ১৫টি মাছের ট্রলার বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকারে গিয়েছিল। টানা পাঁচ দিন সাগরে জাল ফেলে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাতে ১৫টি ট্রলারই পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাটে ফিরে এসেছে। এর মধ্যে ১৪টি ট্রলার একাধিক স্থানে জাল ফেললেও অল্প পরিমাণে মাছ পেয়েছে। কিন্তু পাথরঘাটার উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবিরের মালিকানাধীন এফবি সাইফ-২ নামের একটি ট্রলার ৮৭ মণ ইলিশ নিয়ে ফিরেছে।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে এসব ইলিশ দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বিএফডিসি পাথরঘাটা ঘাটের মেঝেতে স্তূপ করে রাখা হয়। এ সময় মাছগুলো ৫২ হাজার টাকা মণ দরে ৪৫ লাখ ২৪ হাজার টাকায় মেসার্স সাইফ ফিশিং কোম্পানি অ্যান্ড কমিশন এজেন্টের গোলাম মোস্তফা কিনে নেন।
এফবি সাইফ-২ ট্রলারের মাঝি মো. জামাল হোসেন জানান, গত রবিবার (৮ আগস্ট) পাথরঘাটা থেকে বাজার-সদায় নিয়ে গভীর সাগরে মাছ শিকার করতে যান। সাগরে গিয়ে সোমবার (৯ আগস্ট) জাল পাতলে কোনও মাছ ওঠেনি। সেখান থেকে আরও ১২ ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে সেন্টমার্টিন থেকেও গভীরে পৌঁছে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) রাতে জাল ফেলেন তারা।
জামাল বলেন, ‘এক খেওতে এত মাছ উঠছে যে বোট ভইরা গেছে। মাছ রাহনের আর জাগা ছিল না। আর খেও দেই নাই। মাছ লইয়া চইলা আইছি।’
ট্রলার মালিক পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, ‘বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না। এর মধ্যে পর পর দুই ট্রিপে আমার ট্রলারে প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরা পড়ছে। এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ১৫টি মাছ ধরার ট্রলার ঘাটে এসেছে। সবাই সামান্য কিছু মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরেছে। তবে এফবি সাইফ-২ প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পেয়েছে।’
এক ট্রলারে এত পরিমাণ ইলিশ পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ট্রলারটিতে আধুনিক সরঞ্জামের পাশাপাশি লম্বা জাল ব্যবহার করে। যা লম্বায় ৯০ হাত আর বর্তমানে সমুদ্রের গভীরে ইলিশ মাছ অবস্থান করছে। এ কারণে ভাসা জালে মাছ কম ধরা পড়ছে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ‘ইলিশ এখনও গভীর বঙ্গোপসাগরে বিচরণ করছে, এটা পরিষ্কার। দ্রুতই এসব ইলিশ মোহনার দিকে আসবে এবং ছড়িয়ে পড়বে। এতে করে নদীতেও ইলিশ পাওয়া যাবে।’