ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
দেশে শনাক্ত কোভিড রোগী ছাড়াল ১৪ লাখ
Published : Saturday, 14 August, 2021 at 12:00 AM, Update: 14.08.2021 1:24:09 AM
দেশে শনাক্ত কোভিড রোগী ছাড়াল ১৪ লাখনিজস্ব প্রতিবেদক : এক দিনে দেশে আরও ৮ হাজার ৪৬৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৪ লাখ। দেশে কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৯৭ জনের। গত ২০ দিনে এই প্রথম দৈনিক মৃত্যু দুইশর নিচে নামল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৮ হাজার ৪৬৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। দৈনি শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা ১০ হাজারের নিচে নামল ৫ দিন পর।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ লাখ ৫ হাজার ৩৩৩ জনে। তাদের মধ্যে ২৩ হাজার ৮১০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশে। এই হার আগের দিন ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ ছিল।
আগের দিন বৃহস্পতিবার সারা দেশে ১০ হাজার ১২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ২১৫ জনের। সেই হিসেবে এক দিনের ব্যবধানে শনাক্ত রোগীর আর মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই আরও কমেছে।
গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৩ হাজার ৯৪৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আর এই সময়ে যে ১৯৭ জন মারা গেছেন, তাদের ৭৮ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন আরও ৫৩ জন।
সরকারি হিসেবে এক দিনে সেরে উঠেছেন ১১ হাজার ৪৫৭ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৫২২ জন সুস্থ হলেন।
বাংলাদেশ গত বছরের ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়ায় গত বছরের ১৮ জুন।
এক মাসের মধ্যে আরও এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার মধ্য দিয়ে মোট শনাক্ত দুই লাখ ছাড়ায় গত বছরের ১৮ জুলাই।
এরপর ২৬ অগাস্ট তিন লাখ, ২৬ অক্টোবর ৪ লাখ, ২০ ডিসেম্বর ৫ লাখ, ২৯ মার্চ ৬ লাখের ঘর ছাড়ায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা।
এরপর সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকে। ১৪ এপ্রিল ৭ লাখ, ৩১ মে ৮ লাখ, ২৯ জুন ৯ লাখ ছাড়ানোর পর দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯ জুলাই ১০ লাখের মাইল ফলকও ছাড়িয়ে যায়।
নয় দিন পর ১৮ জুলাই সেই সংখ্যা পৌঁছায় ১১ লাখে। তা ১২ লাখে পৌঁছায় ২৮ জুলাই। সেদিনই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
১২ লাখ থেকে মোট শনাক্ত রোগী ১৩ লাখে পৌঁছায় ৪ অগাস্ট, অর্থাৎ সময় লাগে মাত্র সাত দিন। মহামারীর মধ্যে এত কময় সময়ে এক লাখ কোভিড রোগী আগে কখনও শনাক্ত হয়নি।
মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৩ লাখ থেকে ১৪ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছে ৯ দিন। অর্থাৎ সংক্রমণের গতি সামান্য হলেও ধীর হয়েছে।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১০ অগাস্ট তা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জনের মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২০ কোটি ৫২ লাখের বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৪৫ হাজার ৭৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮৩ লাখ ১ হাজার ৫৪৯টি নমুনা।
নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশে, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৯ শতাংশে।
গত এক দিনে ঢাকা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৫৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিভাগের গাজীপুরে ১৯৬ জন, মানিকগঞ্জে ১৮৪ জন, মুন্সীগঞ্জে ১৬৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ২২৩ জন, নরসিংদীতে ১৬০ জন এবং শরীয়তপুরে ১৭৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৬১৬ জন, কক্সবাজারে ১৮৮ জন, ফেনীতে ১৩৯ জন, নোয়াখালীতে ১৬৮ জন, চাঁদপুরে ১৫৩ জন, কুমিল্লায় ২৭০ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৩৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
অন্য বিভাগগুলোর বিভিন্ন জেলার মধ্যে রাজশাহী জেলায় ১১৫ জন, পাবনায় ১১১ জন, বরিশাল জেলায় ২২১ জন, ভোলায় ১০০ জন, সিলেট জেলায় ৩৯০ জন এবং ময়মনসিংহে ১৮২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে গত এক দিনে।
ঢাকা বিভাগে গত এক দিনে যে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৪১ জনই ছিলেন ঢাকা জেলার। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া ৫৩ জনের মধ্যে ১৭ জন কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৮ জন, বরিশাল বিভাগে ১১ জন, খুলনা বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন, সিলেট বিভাগে ৮ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ জনের মৃত্যু ঘটেছে গত এক দিনে।
মৃত ১৯৭ জনের মধ্যে ১২৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৪৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।
মৃতদের মধ্যে ১০৮ জন ছিল পুরুষ, ৮৯ জন নারী। ১৫৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩২ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৯ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।