Published : Tuesday, 17 August, 2021 at 12:00 AM, Update: 17.08.2021 12:55:38 AM
আলমগীর হোসেন,দাউদকান্দি ||
কিশোর
গ্যাং যত দিন যাচ্ছে যাচ্ছে, তাদের অপরাধগুলো ক্রমেই হিংস্র, নৃশংস ও
বিভীষিকাপূর্ণরূপে দেখা দিচ্ছে। ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, হামলা-মামলা দিয়ে লক্ষ
লক্ষ টাকা আদায় করে কোটিপতি বনে গিয়েছেন দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ
দক্ষিণ ইউনিয়নের বাশরা গ্রামের কিশোর গ্যাং এর একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র।
সোমবার
সকালে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে দাউদকান্দি ইলিয়টগঞ্জ পুটিয়ায় কিশোর গ্যাং ও
মিথ্যা হয়রানী মামলা থেকে প্রতিকার চেয়ে ভোক্তভোগীদের ব্যানারে মানবন্ধন ও
প্রতিবাদ সমাবেশে এসব অভিযোগ করে বক্তব্য রাখেন গ্রামবাসী। এই মানবন্ধনে
বাশরা, হাটখোলা, লক্ষাইতুলী ও চাপাতুলী গ্রামের কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ
অংশগ্রহণ করেন।
মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাহেজুল
আমিন বাঁধনের বিরুদ্ধে প্রশাসনে কাছে প্রায় ১৮টি অভিযোগ রয়েছে। বাধঁন কখনও
প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়, বড় সরকারি কর্মকর্তা আত্মীয়, কোন বড় মাপের নেতার
লোক বলে নানান পরিচয় দিয়ে থাকেন। সাধারণ মানুষের উপর তার অত্যাচার করা
নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে। নিরহ এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে অবশেষে কয়েকটি গ্রামের
কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। বাঁধন
এর বিরুদ্ধে আইনগত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানান।
দ্রুত কিশোর গ্যাংয়ের দল নেতা বাঁধনকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে
তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, আলী
আহম্মদ মিয়াজী, হুমায়ন চৌধুরী, ইসমাইল মজুমদার, আলমগীর সরকার ও নুরুল ইসলাম
মাস্টার প্রমূখ।
জানা যায়, রাহেজুল আমিন বাঁধন ২০১৬ সালে পুলিশ
কনস্টেবল চাকুরি করার আগে থেকে এলাকায় নানা রকম সামাজিক অপরাধ করে আসছিলো।
পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগদানের পর থেকেই তার অপরাধের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে
থাকে। কিশোর গ্যাং সঙ্ঘবদ্ধ চক্র করে এলাকায় বিভিন্ন জনকে হত্যার হুমকি,
চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল জরিমানা এবং যাকে তাকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত
করার ঘটনায় এলাকায় মানুষ এখন আতংকে আছেন বলে ভুক্তভোগীরা মানবন্ধনে জানান।
অভিযুক্ত রাহেজুল আমিন বাঁধন দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের
বাশরা গ্রামের আলী আহম্মদ সরকারের ছেলে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লার সিনিয়র
সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মো: জুয়েল রানা বলেন, কিশোর
গ্যাংসহ যে কোন অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। বর্ণিত
গ্যাং এর নেতা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ফৌজদারী মামলা নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি এই ৫ গ্রামে গ্যাং কালচার প্রতিরোধে পুলিশী টহল, গ্যাং কালচার
প্রতিরোধে সচেতনতা সভাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে এই
সমস্যাগুলো সামাজিকভাবে সমাধান করে সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ
নিয়েছি। আশা করি দ্রুত সময়ে দাউদকান্দি থেকে এই গ্যাং কালচার উৎখাত হবে।