ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
টাকা লোপাটের বিশাল চক্রকে কে আটকাবে সারের জন্য কৃষকের হাহাকার
Published : Saturday, 30 October, 2021 at 12:00 AM
টাকা লোপাটের বিশাল চক্রকে কে আটকাবে সারের জন্য কৃষকের হাহাকারকৃষকের কাছে সার সহজলভ্য করতে কয়েক হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয় সরকার। কৃষি খাতের উন্নয়নের জন্য নিঃসন্দেহে বিশাল ঘটনা এটি। কিন্তু সেই ভর্তুকি কি কৃষকদের কোনো উপকারে আসে? সেটিই যদি হতো, প্রয়োজন মুহূর্তে সারের জন্য হাহাকার করতেন না কৃষকেরা। রবি মৌসুমের জন্য সার আমদানি করা হয়েছে ঠিকই, এমনকি জেলা পর্যায়ে বরাদ্দও হয়ে গেছে। কিন্তু জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সেটি পৌঁছাতে লেগে যাচ্ছে কয়েক সপ্তাহ। এদিকে রবিশস্যের বীজ বপন শুরু হয়ে গেলেও সেটির জন্য রাজশাহী অঞ্চলের অনেক জায়গায় সার পৌঁছায়নি।
জাহাজ আসতে দেরি হওয়ার অজুহাত দেওয়া হলেও একধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেদন জানাচ্ছে, দেরিতে জেলা ও উপজেলায় সার পাঠানো হচ্ছে, সেই সার উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যন্ত ডিলারদের কাছে হস্তান্তরও হচ্ছে দেরিতে। ফলে কৃষকেরা সময়মতো সার পাচ্ছেন না। অন্যদিকে বেসরকারি পর্যায়েও সার আমদানিতে ভর্তুকি দেয় সরকার, সব সারের একই মূল্য নির্ধারিত। সেই সারই বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। আবার অনেক ডিলার সরাসরি কৃষককে সার না দিয়ে অনৈতিকভাবে একধরনের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এক জেলার বরাদ্দ সার অন্য জেলায় নিয়ে গিয়েও বিক্রি হচ্ছে। মুখে বলা হলেও আদতে কোনো ধরনের মনিটরিং নেই।
টিএসপি সারের বেশি চাহিদা থাকলেও সেটি ব্যবহারে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করছে সরকার। আবার সেই সার আমদানিও করা হচ্ছে। অন্যদিকে ডিএপি সার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সব সারই ভর্তুকির। টিএসপির সংকটে ডিএপি সারও বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। দিন শেষে শস্য ফলিয়ে খরচ তুলতেই হিমশিম পরিস্থিতিতে পড়ছেন কৃষক। মূলত সার নিয়ে সরকারের একেক সময় এক নীতি কৃত্রিম সংকট তৈরির সুযোগ করে দিচ্ছে।
একসময় কৃষকদের কাছে সার পৌঁছানোর পর আমদানিকারকেরা ভর্তুকি বুঝে পেতেন, ২০১০ সাল থেকে সেটি তাঁরা শুরুতেই পেয়ে যান। একদিকে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে, সেই সার আবার বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফাও করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা, আমদানিকারক ও ডিলাররা এ চক্রের সঙ্গে যুক্ত। এর মাধ্যমে শত শতকোটি টাকা লোপাট করে দিচ্ছেন তাঁরা। কৃষক সার পাওয়ার পর আমদানিকারককে ভর্তুকির টাকা পরিশোধ করা, মাঠপর্যায়ে জোরালো মনিটরিং, অনিয়মকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছাড়া কোনোভাবেই এ চক্র ভাঙা সম্ভব নয়। সংসদীয় কমিটিসহ সরকারের শীর্ষ মহলের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।