রাজশাহী টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের (টিটিসি) কম্পিউটার ল্যাবে রহস্যজনক চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেরা ল্যাব থেকে ২৯টি কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে গেছে। মনিটর বা অন্য কোন জিনিস নিয়ে যাওয়া হয়নি। শুধু কম্পিউটারগুলোর সিপিইউ খুলে হার্ডডিস্ক, র্যাম, কুলিং ফ্যান, মাদারবোর্ড ও প্রসেসরসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কম্পিউটার ল্যাবটি টিটিসির ভিতর আইটি ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত। রবিবার (২১ মার্চ) বিকালে কর্তৃপক্ষ চুরির বিষয়টি জানতে পারে। আইটি ভবনে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা থাকলেও ফুটেজ সেভ হতো না। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা টিটিসির অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার এসএম এমদাদুল হককে জানালেও তিনি পদক্ষেপ নেননি। ফলে এখন চোর শনাক্ত করা যাচ্ছে না। পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে তাদের মনে হয়েছে এটা ছিঁচকে চোরের কাজ নয়।
অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার এসএম এমদাদুল হক দাবি করেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ হার্ডডিস্কে সেভ না হওয়ার বিষয়টি তিনি আগে জানতেন না। এই চুরির ঘটনায় নিজের কোন দায় নেই বলেও দাবি করেন তিনি। অধ্যক্ষ জানান, রবিবার বিকালে ল্যাবে প্রশিক্ষণার্থীদের কম্পিউটার ক্লাস ছিল। তখনই চুরির বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। তবে মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার ভোর ৬টার মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
চুরির ঘটনায় রবিবার রাতেই রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে এ মামলা করেন অধ্যক্ষ। ঘটনা তদন্তে উপাধ্যক্ষ আক্তারা শাহীনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও তিনি গঠন করেছেন। সোমবার সকালে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ল্যাবটি পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া রাতেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
টিটিসি সূত্র বলছে, চারতলা ভবনটির নিচতলার প্রধান ফটকের তালা স্বাভাবিক ছিল। তবে তৃতীয় তলার ল্যাবের তালা ভাঙা পাওয়া গেছে। এই ভবনটির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সেভ না থাকার কারণে চোর শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সিসি ক্যামেরার এ বিষয়টি আগেই অধ্যক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল। তবে এ ব্যাপারে তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। টিটিসির ভিতরেরই কেউ এই চুরির সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও এমন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম খান বলেন, এটা রাস্তার ছিঁচকে চোরের কাজ নয়। ল্যাবের কম্পিউটারে বিশেষ কিছু থাকারও কথা নয়। শুধু বিক্রি করে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যেই চুরি করা হয়েছে। চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে। তাকে শনাক্ত করে চুরি হওয়া কম্পিউটার সামগ্রী উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।